কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা। প্রমান দুইঃ যারা দাবি করেন কুরআনের বাহিরের হাদিস ব্যতিত পাচ সময়ের সলাহ আদায় সম্ভব নয় তারা নিচে বর্নিত কুরআনের হাদিসসমুহ অধ্যয়ন করুন। এছাড়াও সুরহ মাইদাহের ছয় নমবর বাক্য ও সুরহ মুজ্জামিল, মুদ্দাসসিরসহ কুরআন অধ্যয়ন করুন। তাহলে ইনশাআললাহ সলাহ যে কেবল পাচ সময়ের আনুষ্টানিকতা নয় তা বুঝতে পারবেন। যারা দৈনিক ১৭ রকাআত ফারদ সলাহতের প্রমান চান। তারা সুরহ ইমরনের ১৫৯, সুরহ আশ শুরর ৩৮ এবং সুরহ হাদিদের ২৭ নমবর বাক্য অধ্যয়ন করুন।
সুরহ ইমরনঃ ৪৩) হে মারইয়াম তোমার রবের ফরমানের অনুগত হয়ে থাকো৷ তাঁর সামনে সিজদানত হও এবং যেসব বান্দা তাঁর সামনে অবনত হয় তুমিও তাদের সাথে অবনত হও। ( এই বাক্য প্রমান করে জামাতে সলাহ আদায়ের গুরত্ব পুরুষ নারির জন্য সমান )
সুরহ বাকরহঃ ৪৩) সলাহ প্রতিষ্টা করো, যাকাত দাও এবং যারা আমার সামনে অবনত হচ্ছে তাদের সাথে তোমরাও অবনত হও। ৪৫) সবর ও সলাহ সহকারে সাহায্য নাও নিসন্দেহে সলাহ বড়ই কঠিন কাজ, ৪৬) কিন্তু সেসব অনুগত বান্দাদের জন্য কঠিন নয় যারা মনে করে , সবশেষে তাদের মিলতে হবে তাদের রবের সাথে এবং তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে। ১৫২) কাজেই তোমরা আমাকে স্মরণ রাখো, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ রাখবো আর আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং আমার নিয়ামত অস্বীকার করো না। ১৫৩) হে ঈমানদারগণ সবর ও সলাহতের দ্বারা সাহায্য গ্রহণ করো , আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন। ২৩৮) তোমাদের সলাহসমুহ সংরক্ষণ করো, বিশেষ করে এমন সলাহ যাতে সলাহতের সমস্ত গুণের সমন্বয় ঘটেছে। আল্লাহর সামনে এমনভাবে দাঁড়াও যেমন অনুগত সেবকরা দাঁড়ায়। ২৩৯) অশান্তি বা গোলযোগের সময় হলে পায়ে হেঁটে অথবা বাহনে চড়ে যেভাবেই সম্ভব সলাহ পড়ো ৷ আর যখন শান্তি স্থাপিত হয়ে যায় তখন আল্লাহকে সেই পদ্ধতিতে স্মরণ করো , যা তিনি তোমাদের শিখিয়েছেন, যে সম্পর্কে ইতিপূর্বে তোমরা অনবহিত ছিলে। ২৭৭) অবশ্যি যারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে, সলাহ কায়েম করে ও যাকাত দেয়, তাদের প্রতিদান নিসন্দেহে তাদের রবের কাছে আছে এবং তাদের কোন ভয় ও মর্মজ্বালাও নেই ৷
সুরহ আহযাবঃ ৪১) হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ করো। ৪২) এবং সকাল সাঁঝে তাঁর মহিমা ঘোষণা করতে থাকো।
সুরহ রুমঃ ১৭) কাজেই আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করো যখন তোমাদের সন্ধ্যা হয় এবং যখন তোমাদের সকাল হয়। ১৮) আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে তাঁর জন্যই প্রশংসা এবং (তাঁর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করো) তৃতীয় প্রহরে এবং যখন তোমাদের কাছে এসে যায় যোহরের সময়।
সুরহ তহাঃ ১৩০) কাজেই হে মুহাম্মাদ! এরা যেসব কথা বলে তাতে সবর করো এবং নিজের রবের প্রশংসা ও গুণকীর্তন সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো সূর্য উদয়ের আগে ও তার অস্ত যাবার আগে, আর রাত্রিকালেও প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং দিনের প্রান্তগুলোতেও হয়তো এতে তুমি সন্তুষ্ট হয়ে যাবে।
সুরহ দাহরিঃ ২৫) সকাল সন্ধ্যায় তোমার রবের নাম স্মরণ করো। ২৬) রাতের বেলায়ও তার সামনে সিজদায় অবনত হও৷ রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর তাসবীহ অর্থাৎ পবিত্র বর্ণনা করতে থাকো।
সুরহ সদঃ ১৭) হে নবী! এরা যে কথা বলে তার ওপর সবর করো এবং এদের সামনে আমার বান্দা দাউদের কাহিনী বর্ণনা করো, যে ছিল বিরাট শক্তিধর, প্রত্যেকটি ব্যাপারে ছিল আল্লাহ অভিমুখী। ১৮) পর্বতমালাকে আমি বিজিত করে রেখেছিলাম তার সাথে, ফলে সকাল সাঁঝে তারা তার সাথে আমার গুণগান, পবিত্রতা ও মহিমা প্রচার করতো। ১৯) পাখপাখারী সমবেত হতো এবং সবাই তার তাসবীহ অভিমুখী হয়ে যেতো। ২০) আমি মজবুত করে দিয়েছিলাম তার সালতানাত, তাকে দান করছিলাম হিকমত এবং যোগ্যতা দিয়েছিলাম ফায়সালাকারী কথা বলার।
সুরহ কলামঃ ৪২) যেদিন কঠিন সময় এসে পড়বেএবং সিজদা করার জন্য লোকদেরকে ডাকা হবে৷ কিন্তু তারা সিজদা করতে সক্ষম হবে না। ৪৩) তাদের দৃষ্টি হবে অবনত ৷ হীনতা ও অপমানবোধ তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে৷ এর আগে যখন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলো তখন সিজাদার জন্য তাদেরকে ডাকা হতো (কিন্তু তারা অস্বীকৃতি জানাতো)৷
সুরহ হুদঃ ১১৪) আর দেখো, সলাহ কায়েম করো দিনের দু’ প্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হবার পর আসলে সৎকাজ অসৎকাজকে দূর করে দেয়৷ এটি একটি স্মারক তাদের জন্য যারা আল্লাহকে স্মরণ রাখে।
সুরহ বানি ইসরঈলঃ ৭৮) সলাহ কায়েম করো সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে নিয়ে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত এবং ফাজারে কুরআন পড়ারও ব্যবস্থা করো৷ কারণ ফাজারের কুরআন পাঠ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে৷ ৭৯) আর রাতে তাহাজ্জুদ পড়ো এটি তোমার জন্য নাফাল অচিরেই তোমার রব তোমাকে “প্রশংসিত স্থানে” প্রতিষ্ঠিত করবেন।
সুরহ হাজঃ ২৬) স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন আমি ইবরাহীমের জন্য এ ঘরের (কাবাঘর) জায়গা নির্ধারণ করেছিলাম (এ নির্দেশনা সহকারে) যে, আমার সাথে কোনো জিনিসকে শরীক করবে না এবং আমার ঘরকে তাওয়াফকারী ও রুকূ’-সিজদা-কিয়ামকারীদের জন্য পবিত্র রাখে। ৭৭) হে ঈমানদারগণ! রুকূ’ ও সিজদা করো, নিজের রবের বন্দেগী করো এবং নেক কাজ করো, হয়তো তোমাদের ভাগ্যে সফলতা আসবে।
সুরহ নিসাঃ ৪৩) হে ঈমানদারগণ ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সলাহতের কাছে যেয়ো না৷ সলাহ সেই সময় পড়া উচিত যখন তোমরা যা বলছো তা জানতে পারো৷ অনুরূপভাবে অপবিত্র অবস্থায়ও গোসল না করা পর্যন্ত সলাহতের কাছে যেয়ো না ৷ তবে যদি পথ অতিক্রমকারী হও, তাহলে অবশ্যি স্বতন্ত্র কথা৷ আর যদি কখনো তোমরা অসুস্থ হয়ে পড়ো, সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ মলমূত্র ত্যাগ করে আসে অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ করে থাকো এবং এরপর পানি না পাও, তাহলে পাক –পবিত্র মাটির সাহায্য গ্রহণ করো এবং তা নিজেদের চেহারা ও হাতের ওপর বুলাও। নিসন্দেহে আল্লাহ কোমলতা অবলম্বনকারী ও ক্ষমাশীল। ১০১) আর যখন তোমরা সফরে বের হও তখন সলাহ সংক্ষেপ করে নিলে কোন ক্ষতি নেই। (বিশেষ করে) যখন তোমাদের আশংকা হয় যে, কাফেররা তোমাদেরকে কষ্ট দেবে। কারন তারা প্রকাশ্য তোমাদের শতরুতা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। ১০২) আর হে নাবি ! যখন তুমি মুসলমানদের মধ্যে থাকো এবং (যুদ্ধাবস্থায়) তাদেরকে সলাহ পড়াবার জন্য দাঁড়াও তখন তাদের মধ্য থেকে একটি দলের তোমার সাথে দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত এবং তারা অস্ত্রসস্ত্র সংগে নেবে৷ তারপর তারা সিজদা করে নিলে পেছনে চলে যাবে এবং দ্বিতীয় দলটি, যারা এখনো সলাহ পড়েনি, তারা এসে তোমার সাথে সলাহ পড়বে৷ আর তারাও সর্তক থাকবে এবং নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র বহন করবে৷ কারন কাফিররা সুযোগের অপেক্ষায় আছে, তোমরা নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র ও জিনিস পত্রের দিক থেকে সামান্য গাফেল হলেই তারা তোমাদের ওপর অকস্মাৎ ঝাঁপিয়ে পড়বে৷ তবে যদি তোমরা বৃষ্টির কারণে কষ্ট অনুভব করো অথবা অসুস্থ থাকো, তাহলে অস্ত্র রেখে দিলে কোন ক্ষতি নেই৷ কিন্তু তবুও সর্তক থাকো৷ নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাকর আযাবের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। ১০৩) তারপর তোমরা সলাহ শেষ করার পর দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো৷ আর মানসিক প্রশান্তি লাভ করার পর পুরো সলাহ পড়ে নাও৷ আসলে সলাহ নির্ধারিত সময়ে পড়ার জন্য মুমিনদের ওপর ফারদ করা হয়েছে।
কুরআনের ভুল ব্যাখ্যা
প্রকাশ তারিখঃ ৬ মার্চ, ২০২১ইং
কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা। প্রমান তিনঃ- সুরহ আরফঃ ৪৩) তাদের মনে পরষ্পরের বিরুদ্ধে যা কিছু গ্লানি থাকবে তা আমি বের করে দেবো৷ তাদের নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে এবং তারা বলবেঃ “প্রশংসা সব আল্লাহরই জন্য, যিনি আমাদের কুরআনের পথ দেখিয়েছেন৷ আমরা নিজেরা পথের সন্ধান পেতাম না যদি না আল্লাহ আমাদের পথ দেখাতেন আমাদের রবের পাঠানো রসূলগণ যথার্থ সত্য নিয়েই এসেছিলেন৷” সে সময় আওয়াজ ধ্বনিত হবেঃ “তোমাদেরকে এই যে জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানানো হয়েছে, এটা তোমরা লাভ করেছো সেই সমস্ত কাজের প্রতিদানে যেগুলো তোমরা অব্যাহতভাবে করতে৷ সুরহ রুমঃ ৩০) কাজেই ( হে নাবি এবং নাবির অনুসারীবৃন্দ ) একনিষ্ঠ হয়ে নিজের চেহারা এ দীনের দিকে স্থির নিবদ্ধ করে দাও৷ আল্লাহ মানুষকে যে প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করেছেন তাঁর ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাও৷ আল্লাহ তৈরি সৃষ্টি কাঠামো পরিবর্তন করা যেতে পারে না৷ এটিই পুরোপুরি সঠিক ও যথার্থ দীন৷ কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না৷
ব্যাখ্যাঃ প্রথম বাক্যে কুরআন অধ্যয়নের গুরত্ব ও প্রাপ্তি বোঝানো হয়েছে। দিত্বিয় বাক্যে সকল মানবিকতার বইয়ের লেখকগন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কুরআন থেকে নিতিবাক্য নকল ও চুরি করেছে বলা আছে। যেমন বুখারি, মুসলিম, গাজ্জালি, রবিন্দ্রনাথ, নজরুল, Shakespeare প্রভৃতি। প্রত্যেক মুসলিমকে ৩০ পারা কুরআনের জ্ঞান অর্জন করে তারপর অন্য কোনো বই পড়তে বাধা নেই। কিনতু বাস্তবতা হলো কুরআনের পাঠক নিশ্চিত হবে যে ধর্ম জ্ঞানের জন্য কুরআন ব্যতিত অন্য কোনো বই অধ্যয়ন প্রয়োজন নেই। আবার ধর্ম ও ধর্ম জ্ঞান কাকে বলে তাতেও আমাদের ভুল ধারনা আছে। ব্যক্তির বিশ্বাস ও প্রতিটা মুহুর্তের কাজকেই ধর্ম বলে। যেমন কুরআনে মাছ চাষের নিয়ম বলা হয়নি তাই মাছ চাষ কিভাবে করতে হয় তা অভিজ্ঞ ব্যক্তির কাছে শিক্ষা করতে হবে। মাছ চাষ শিক্ষা করার পদ্ধতিটা ধর্ম জ্ঞান নয়, কিনতু মাছ কে সৃষ্টি করলেন বা মাছ কেন খাচ্ছি, মাছ কেন আমাকে খাচ্ছে না প্রভৃতি কুরআন থেকে শিখতে হবে। এটি হলো ধর্ম জ্ঞান। তাই মুসলিমকে ধর্ম ও ধর্ম জ্ঞানের সমন্বয় কি জিনিস সেটাও জানা থাকতে হবে। তবে কুরআন বিমুখ পাঠকদের Brain Wash করার জন্য কুরআন পাঠকদেরকে কুরআন বিমুখ পাঠকদের বই অধ্যয়ন করা লাগবে। নিচের ভিডিওর আড়াই মিনিট থেকে দেখতে থাকুন। Covid এর ভয়ে এই আলিম ভাই পাচ সময়ের ফারদ সলাহ মাসজিদে আদায় করা জরুরি নয় এবং হাচি কাশিতে হাত দেওয়ার ভিন্ন নিয়ম উল্লেখসহ আরও কিছু বিষয়ে শিক্ষামুলক আলাপ করেছেন। অথচ আলিম ভাইদের কাছেই আমরা গিলেছি মাসজিদে ২৭গুন সাওয়াব, দাড়ি রাখা ওয়াজিব, টাখনুর নিচের অংশ জাহান্নামে যাবে, নারির মাথা ঢাকা ওয়াজিব, আরও কত কিছু। তাই ইসলাম শিখতে আগে কুরআন অধ্যয়ন করুন। তারপর যদি প্রয়োজন হয় আলিম ভাইদের বক্তব্য শুনবেন। অন্যান্য বই পড়বেন। আলিম ভাইদের দায়িত্ব হলো সাধারন মুসলিমদেরকে উপরের দুই বাক্যের মতো করে কুরআনের বাক্যসমুহের সমন্বয় কিভাবে করতে হয় সেটা শিক্ষা দেওয়া। কারন কুরআন বিশাল একটা বই। তাই সবার পক্ষে এই সমন্বয় সম্ভব নয়। এই দুর্বলতার সুযোগে তারা নিজেদের পছন্দের হাদিসকে কুরআনের হাদিস বলে চালিয়ে দেন। এমনকি তারা অহংকারের সাথে দাবি করেন যে তাদের ও তাদের পুর্ব পুরুষ আলিম ব্যতিত ইসলাম ধ্বংস হয়ে যেত। কি সাংঘাতিক কুরআন বিরোধি কথা। অথচ আললাহ বলেছেন, সুরহ হিজরিঃ ৯) আর এ বাণী, একে তো আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক৷
সালামুন আলা মুহাম্মাদকে অনুসরণ করার অর্থ কুরআন অনুসরণ করা
প্রকাশ তারিখঃ ১৮ মার্চ, ২০২১ইং