My Facebook Collection 40-50

কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৫০, অর্ধশতঃ
২০-আগষ্ট-২০২৩ইং, ৩ সাফার ১৪৪৫ হিজরি।
৩২ নম্বর, সুরহ সিজদাহঃ ২২) আর তার চেয়ে বড় জালেম কে হবে যাকে তার রবের আইয়াতের সাহায্যে উপদেশ দেয়া হয় এবং সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়? এই ধরনের অপরাধীদের থেকে তো আমি প্রতিশোধ নেবোই। ২৫) নিশ্চিতই তোমার রবই কিয়ামতের দিন সেসব কথার ফায়সালা করে দেবেন যেগুলোর ব্যাপারে তারা পরস্পর মতবিরোধে লিপ্ত থেকেছে। ১৩) যদি আমি চাইতাম তাহলে পূর্বাহ্নেই প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার হিদায়াত দিয়ে দিতাম। কিন্তু আমার সে কথা পূর্ণ হয়ে গেছে, যা আমি বলেছিলাম যে, আমি জাহান্নাম জিন ও মানুষ দিয়ে ভরে দেবো। ৯) তারপর মানুষকে সর্বাঙ্গ সুন্দর করেছেন এবং তার মধ্যে নিজের রূহ ফুঁকে দিয়েছেন আর তোমাদের কান, চোখ ও হৃদয় দিয়েছেন, তোমরা খুব কমই আললাহ র' দানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। ১৫) আমার আয়াতের প্রতি তো তারাই ঈমান আনে যাদেরকে আইয়াহসমুহ শুনিযে যখন উপদেশ দেয়া হয় তখন তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং নিজেদের রবের প্রশংসা সহকারে তার মহিমা ঘোষণা করে এবং অহংকার করে না। ১৬) তাদের পিঠ থাকে বিছানা থেকে আলাদা, নিজেদের রবকে ডাকে আশংকা ও আকাঙ্ক্ষা সহকারে এবং যা কিছু রিযিক আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। ১৪) কাজেই আললাহ র' সাথে আখিরতের দিনের সাক্ষাতকারের কথা ভুলে গিয়ে তোমরা যে কাজ করেছো এখন তার মজা ভোগ করো। আমিও এখন তোমাদের ভুলে গিয়েছি, নিজেদের কর্মফল হিসেবে চিরন্তন আযাবের স্বাদ আস্বাদন করতে থাকো। ৩০) বেশ, এদেরকে এদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দাও এবং অপেক্ষা করো, এরাও অপেক্ষায় আছে।
ব্যাখ্যাঃ সুরহ সিজদার ১৩ নম্বর হাদিসের অর্থ এটা নয় যে, আললাহ বলেছেন বলে জাহান্নাম মানুষ ও জিন দিয়ে ভরে যাবে। বরং উপরে উল্লেখিত বাকি হাদিসগুলো বুঝে অধ্যয়ন করলে আমরা জানতে পারি যে আললাহ র' দেওয়া স্বাধিনতার বিরতিহিন অপব্যবহার এবং ক্ষমা চেয়ে আললাহ র' কুরআনে বলা ভালো পথে ফিরে না আসা এবং অতিতের পাপের ক্ষতিপুরণ না দেওয়ার কারনেই মানুষ ও জিন জাহান্নামি হবে। ২২ ও ২৫ নম্বর হাদিস প্রমান করে কুরআন ব্যতিত মুহাম্মাদ সললাললাহু আলায়হি ওয়া সাললামের আর কোনো হাদিস নাই। ইনশাআললাহু আমিনিনা। সুরহ ইউসুফ, হাদিস নম্বর ৯৯

কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪৯ঃ
১৯ জুলাই ২০২৩ইং
সুরহ নামালঃ ৫৯) বলো, প্রশংসা আললাহ র' জন্য এবং সালাম তার এমন সব বান্দাদের প্রতি যাদেরকে তিনি নির্বাচিত করেছেন। (তাদেরকে জিজ্ঞাস কর) আললাহ ভাল অথবা সেই সব মাবুদরা ভাল যাদেরকে তারা তার শরিক করেছে? ৬০) কে তিনি যিনি আকাশ সমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের জন্য আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করছেন তারপর তার সাহায্যে সদৃশ্য বাগান উৎপাদন করেছেন যার গাছপালাও উৎপন্ন করাও তোমাদের আয়াত্বধীন ছিল না? আললাহ র' সাথে কি (এসব কাজে অংশীদার) অন্য ইলাহও আছে? (না,) বরং এরাই সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে এগিয়ে চলছে। ৬১) আর তিনি কে, যিনি পৃথিবীকে করেছেন অবস্থান লাভের উপযোগী এবং তার মধ্যে প্রবাহিত করেছেন নদ নদী এবং তার মধ্যেই গড়ে দিয়েছেন (পর্বত মালার) পেরেক, আর পানির দুটি ভান্ডারের মাঝখানে অন্তরাল সৃষ্টি করে দিয়েছেন। আললাহ র' সাথে (এসব কাজের শরিক) অন্য কোন ইলাহ আছে কি? না, বরং এদের অধিকাংশই অজ্ঞ। ৬২) কে তিনি যিনি আর্তের ডাক শুনেন যখন সে তাকে ডাকে কাতর ভাবে এবং কে তার দুঃখ দূর করেন? আর (কে) তোমাদের পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেন? আললাহ র' সাথে কি আর কোন ইলাহ কি (এ কাজ করেছে)? তোমরা সামান্যই চিন্তা করে থাকো। ৬৩) আর কে জল স্থলে অন্ধকারে তোমাদের পথ দেখান এবং কে নিজের অনুগ্রহের পূর্বাহ্নে বাতাস কে সুসংবাদ দিয়ে পাঠান? আললাহ র' সাথে কি অন্য ইলাহও (এ কাজ করে)? আললাহ অনেক উর্ধ্বে এই শিরক থেকে যা এরা করে। ৬৪) . আর তিনি কে যিনি সৃষ্টির সূচনা করেন এবং তারপর আবার এর পূনরাবৃত্তি করেন? আর কে তোমাদের জীবিকা দেন আকাশ ও পৃথিবী থেকে? আললাহ র' সাথে অন্য কোন ইলাহ কি (একাজে অংশীদার) আছে? বল, আনো তোমাদের যুক্তি, যদি তোমরা সত্যবাদি হয়ে থাকো। ৬৫) . তাদেরকে বল, আললাহ ছাড়া পৃথিবীতে ও আকাশে কেউ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখে না। এবং তারা জানেনা কবে তাদেরকে উঠিয়ে নেয়া হবে। ৬৬) বরং আখেরাতের জ্ঞানেই তাদের থেকে হারিয়ে গিয়েছে। উপরন্তু তারা সে ব্যাপারে সন্দেহের মধ্যে রয়েছে। আসলে তারা সে ব্যাপারে অন্ধ।
ব্যাখ্যাঃ এই হাদিসসমুহ সুরহ নামালের ৫ নম্বর রুকু। এই রুকুর ৬০ থেকে ৬৪ নম্বর হাদিসে, আললাহ তার দানসমুহ আমাদের শিক্ষা দিয়ে বলছেন, আমরা যাতে বিভিন্ন উপায়ে, কৌশলে অন্যের অধিকার, সম্পদ বেদখল না করি, অহংকারি না হই এবং আখিরতমুখি হই। তাই কুরআনের এই ধরনের হাদিসসমুহ প্রতিদিন অধ্যয়ন করতে হবে এবং এই জ্ঞান অনুযায়ি কাজ করতে হবে। আর এটাই প্রকৃত সলাহ। অথচ আমরা সলাহতের শিক্ষার গুরত্ব না দিয়ে, কুরআনে পাচ ওয়াক্ত সলাহ নাই প্রমান দেখিয়ে, কুরআনকে পরিপুর্ন নয় এবং কুরআন বুঝতে বুখারি মুসলিম লাগবে দাবি করে গর্ববোধ করি। এই অজ্ঞতার কারন হলো আমরা কুরআন অর্থ বুঝে অধ্যয়ন করি না। সুবহানাকা আললাহুমমা রববানা আমাদেরকে কুরআনের সিরত বা পথ বুঝা সহজ করে দিন। সালামুন।

কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪৮ঃ
সুরহ হাজঃ ১) হে মানব জাতি! তোমাদের রবের গযব থেকে বাঁচো৷ আসলে কিয়ামতের প্রকম্পন বড়ই (ভয়ংকর) জিনিস। ৩) কতক লোক এমন আছে যারা জ্ঞান ছাড়াই আললাহ র' ব্যাপারে বিতর্ক করে এবং প্রত্যেক বিদ্রোহী শায়তনের অনুসরণ করতে থাকে। ৪) অথচ তার ভাগ্যেই তো এটা লেখা আছে যে, যে ব্যক্তি তার সাথে বন্ধুত্ব করবে তাকে সে পথভ্রষ্ট করে ছাড়বে এবং জাহান্নামের আযাবের পথ দেখিয়ে দেবে। ৮) আরো কিছু লোক এমন আছে যারা কোনো জ্ঞান পথনির্দেশনা ও আলো বিকিরণকারী কিতাব ছাড়াই ঘাড় শক্ত করে। ৯) আল্লাহর ব্যাপারে বিতর্ক করে, যাতে লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্রষ্ট করা যায়৷ এমন ব্যক্তির জন্য রয়েছে দুনিয়ায় লাঞ্ছনা এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে আগুনের আযাবের জ্বালা আস্বাদন করাবো। ১০) এ হচ্ছে তোমার ভবিষ্যত, যা তোমার হাত তোমার জন্য তৈরি করেছে, নয়তো আললাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি যুলুম করেন না। ১৫) যে ব্যক্তি ধারণা করে, আললাহ দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাকে কোনো সাহায্য করবেন না তার একটি রশির সাহায্যে আকাশে পৌঁছে গিয়ে ছিদ্র করা উচিত তারপর দেখা উচিত তার কৌশল এমন কোনো জিনিসকে রদ করতে পারে কিনা যা তার বিরক্তি ও ক্ষোভের কারণ। ১৬) --এ ধরনেরই সুস্পষ্ট কথা সহযোগে আমি কুরআন নাযিল করেছি, আর আললাহ যাকে চান তাকে সৎপথ দেখান। ১৮) তুমি কি দেখো না আললাহ র' সামনে সিজদানত সবকিছই যা আছে আকাশে ও পৃথিবীতে- সূর্য, চন্দ্র, তারকা, পাহাড়, গাছপালা, জীবজন্তু এবং বহু মানুষ ও এমন বহু লোক যাদের প্রতি আযাব অবধারিত হয়ে গেছে? আর যাকে আললাহ লাঞ্ছিত ও হেয় করেন তার সম্মান দাতা কেউ নেই আললাহ যাকিছু চান তাই করেন। ২৪) তাদেরকে পবিত্র কথা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং তাদেরকে দেখানো হয়েছে শ্রেষ্ঠ গুণাবলী সম্পন্ন আল্লাহর পথ। ৭১) তারা আললাহ কে' বাদ দিয়ে এমন কিছুর ইবাদাত করে যাদের জন্য না তিনি কোনো প্রমাণ পত্র অবতীর্ণ করেছেন আর না তারা নিজেরাই তাদের ব্যাপারে কোনো জ্ঞান রাখে। এই জালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই। ৭২) আর যখন তাদেরকে আমার পরিষ্কার আয়াত শুনিয়ে দেয়া হয় তখন তোমরা দেখো সত্য অস্বীকারকারীদের চেহারা বিকৃত হয়ে যাচ্ছে এবং মনে হতে থাকে এ-ই বুঝি যারা তাদেরকে আমার আয়াত শুনায় তাদের ওপর তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে৷ তাদেরকে বলো, “আমি কি তোমাদের বলবো, এর চেয়ে খারাপ জিনিস কি? আগুন৷ আললাহ এরই প্রতিশ্রুতি তাদের জন্য দিয়ে রেখেছেন, যারা সত্য গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং তা বড়ই খারাপ আবাস।
২৬) স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন আমি ইবরাহীমের জন্য এই ঘরের (কাবাঘর) জায়গা নির্ধারণ করেছিলাম (এ নির্দেশনা সহকারে) যে, আমার সাথে কোনো জিনিসকে শরীক করবে না এবং আমার ঘরকে তাওয়াফকারী ও রুকূ’-সিজদা-কিয়ামকারীদের জন্য পবিত্র রাখো। ২৭) এবং লোকদেরকে হজ্জের জন্য সাধারণ হুকুম দিয়ে দাও, তারা প্রত্যেকে দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে ও উটের পিঠে চড়ে ২৮) তোমার কাছে আসবে, যাতে এখানে তাদের জন্য যে কল্যাণ রাখা হয়েছে তা তারা দেখতে পায় এবং তিনি তাদেরকে যেসব পশু দান করেছেন তার উপর কয়েকটি নির্ধারিত দিনে আল্লাহর নাম নেয় নিজেরাও খাও এবং দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকেও খাওয়াও। ২৯) তারপর নিজেদের ময়লা দূর করে, নিজেদের মানত পূর্ণ করে এবং এ প্রাচীন গৃহের তাওয়াফ করে। ৩৪) প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কুরবানীর একটি নিয়ম ঠিক করে দিয়েছি, যাতে (সে উম্মতের) লোকেরা সে পশুদের ওপর আললাহ র' নাম নেয় যেগুলো তিনি তাদেরকে দিয়েছেন। (এ বিভিন্ন নিয়মের উদ্দেশ্য একই) কাজেই তোমাদের ইলাহও সে একজনই এবং তোমরা তাঁরই ফরমানের অনুগত হয়ে যাও। আর হে নবী! সুসংবাদ দিয়ে দাও বিনয়ের নীতি অবলম্বন কারীদেরকে, ৩৫) যাদের অবস্থা এই যে, আললাহ র' নাম স্মরণ করা হলে তাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে, যে বিপদই তাদের ওপর আসে তার ওপর তারা সবর করে, সলাহ কায়েম করে এবং যাকিছু রিযিক তাদেরকে আমি দিয়েছি তা থেকে খরচ করে।
সুরহ বা-ক-রহঃ ১৯৬) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যখন হাজ ও উমরহ করার নিয়ত করো তখন তা পূর্ণ করো। আর যদি কোথাও আটকা পড়ো তাহলে যে কুরবানী তোমাদের আয়ত্বাধীন হয় তাই আললাহ র' উদ্দেশ্যে পেশ করো। আর কুরবানী তার নিজের জায়গায় পৌছে না যাওয়া পর্যন্ত তোমরা নিজেদের মাথা মুণ্ডন করো না। তবে যে ব্যক্তি রোগগ্রস্ত হয় অথবা যার মাথায় কোন কষ্ট থাকে এবং সেজন্য মাথা মুণ্ডন করে তাহলে তার ‘ফিদিয়া’ হিসেবে রোযা রাখা বা সাদকা দেয়া অথবা কুরবানী করা উচিত। তারপর যদি তোমাদের নিরাপত্তা অর্জিত হয় ( এবং তোমরা হজ্জের আগে মক্কায় পৌছে যাও ) তাহলে তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি হজ্জের সময় আসা পর্যন্ত উমরাহর সুযোগ লাভ করে সে যেন সামর্থ অনুযায়ী কুরবানী করে। আর যদি কুরবানীর যোগাড় না হয়, তাহলে হজ্জের যামানায় তিনটি রোযা এবং সাতটি রোযা ঘরে ফিরে গিয়ে, এভাবে পুরো দশটি রোযা যেন রাখে ৷ এই সুবিধে তাদের জন্য যাদের বাড়ী-ঘর মসজিদে হারামের কাছাকাছি নয়। আললাহ র' এই সমস্ত বিধানের বিরোধিতা করা থেকে দূরে থাকো এবং ভালোভাবে জেনে নাও আললাহ কঠিন শাস্তি প্রদানকারী। ১৯৭) হজ্জের মাসগুলো সবার জানা ৷ যে ব্যক্তি এই নিদিষ্ট মাসগুলোতে হজ্জ করার নিয়ত করে, তার জেনে রাখা উচিত, হজ্জের সময়ে সে যেন যৌন সম্ভোগ, দুষ্কর্ম ও ঝগড়া –বিবাদে লিপ্ত না হয়। আর যা কিছু সৎকাজ তোমরা করবে আললাহ তা জানেন ৷ হজ্জ সফরের জন্য পাথেয় সংগে নিয়ে যাও আর সবচেয়ে ভালো পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া ৷ কাজেই হে বুদ্ধিমানেরা, আমার নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকো। ১৯৮) আর হজ্জের সাথে সাথে তোমরা যদি তোমাদের রবের অনুগ্রহের সন্ধান করতে থাকো তাহলে তাতে কোন দোষ নেই ৷ তারপর আরাফাত থেকে অগ্রসর হয়ে ‘মাশআরুর হারাম’ (মুয্‌দালিফা) এর কাছে থেমে আললাহ কে' স্মরণ করো এবং এমনভাবে স্মরণ করো যেভাবে স্মরণ করার জন্য তিনি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। নয়তো ইতিপূর্বে তোমরা তো ছিলে পথভ্রষ্টদের অন্তরভুক্ত। ১৯৯) তারপর যেখান থেকে আর সবাই ফিরে আসে তোমরাও সেখান থেকে ফিরে এসো এবং আললাহ র' কাছে ক্ষমা চাও। নিসন্দেহে তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়। ২০০) অতপর যখন তোমরা নিজেদের হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করবে তখন আললাহ কে' এমনভাবে স্মরণ করবে যেমন ইতিপূর্বে তোমাদের বাপ-দাদাদেরকে স্মরণ করতে বরং তার চেয়ে অনেক বেশী করে স্মরণ করবে ৷ (তবে আললাহ কে' স্মরণকারী লোকদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে) তাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যে বলে, হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ায় সবকিছু দিয়ে দাও। এই ধরনের লোকের জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই।
ব্যাখ্যাঃ আরও একাধিক সুরহসহ সুরহ বাকরহ ও হাজে হাজের বিস্তারিত আছে। প্রচলিত নিয়মে যেসব কুরআনে বলা হয়নি সেগুলো বাড়াবাড়ি কারন তা আললাহ র' আদেশ নয়। সুরহ হাজের ৩,৪,৮-১০,১৬,৭১,৭২ নম্বর হাদিসে কুরআনই যে সালামুন আলা মুহাম্মাদ সললাললাহু আলায়হি ওয়া সাললামের হাদিস তার প্রমান আছে। ১৮ নম্বর হাদিসে আললাহ কে সিজদাহ করতে মাটিতে মাথা রাখাই যে একমাত্র পদ্ধতি নয় তার প্রমান আছে। তাই অন্তরে, মুখে ও কাজে আললাহ র' আদেশ নিষেধ মেনে চলা প্রকৃত সিজদাহ। ১৮ ও ২৪ নম্বর হাদিসে মানুষকে গালাগালাজ, ক্ষতি করা ও মিথ্যা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। তাই যারা ফেসবুক বা ইউটিউব বা সরাসরি অন্যকে অপমান করে সম্মান খোজে তাদের জন্য সতর্কবানি আছে। ২৬ থেকে ৩৫ ও অন্যান্য হাদিসে হাজের বিস্তারিত আছে। ইনশাআললাহু আমিনিনা।

কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪৭ঃ
সুরহ হিজরিঃ ২৬) আললাহ বলেন, আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠন্‌ঠনে পচা মাটি থেকে। ২৭) আর এর আগে জিনদের সৃষ্টি করেছি আগুনের শিখা থেকে।
সুরহ নাহালঃ ৪০) আললাহ বলেন, আমি কোনো জিনিসকে অস্তিত্বশীল করার জন্য এর চেয়ে বেশী কিছু করতে হয় না যে, তাকে হুকুম দিই “হয়ে যাও” এবং তা হয়ে যায়। ৪) তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন ছোট্ট একটি ফোঁটা থেকে। তারপর দেখতে দেখতে সে এক কলহপ্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে।
১১৪) কাজেই হে লোকেরা! আললাহ তোমাদের যা কিছু পাক-পবিত্র ও হালাল রিযিক দিয়েছেন তা খাও এবং আললাহ র' অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, যদি তোমরা সত্যিই তাঁর বন্দেগী করতে বদ্ধপরিকর হয়ে থাকো। ১১৬) আর এই যে, তোমাদের কণ্ঠ ভুয়া হুকুম জারী করে বলতে থাকে এটি হালাল এবং ওটি হারাম, এভাবে আললাহ র' প্রতি মিথ্যা আরোপ করো না৷ যারা আললাহ র' প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তারা কখনোই সফলকাম হবে না।
৯০) আল্লাহ ন্যায়-নীতি, পরোপকার ও আত্মীয়-স্বজনদের দান করার হুকুম দেন এবং অশ্লীল-নির্লজ্জতা ও দুষ্কৃতি এবং অত্যাচার-বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদের কুরআনে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষালাভ করতে পারো। ৯১) আললাহ র' অংগীকার পূর্ণ করো। যখন তোমরা তাঁর সাথে কোনো অংগীকার করো এবং নিজেদের শপথ দৃঢ় করার পর আবার তা ভেঙে ফেলবে না। যখন তোমরা আললাহ কে' নিজের ওপর সাক্ষী বানিয়ে নিয়েছো। আললাহ তোমাদের সমস্ত কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত আছেন। ৯৪) (আর হে মুসলমানরা!) তোমরা নিজেদের আলাপ আলোচনা, লেনদেন, শপথ পরস্পরকে ধোঁকা দেবার মাধ্যমে পরিণত করো না। কোনো পদক্ষেপ একবার দৃঢ় হবার পর আবার যেন পিছলে না যায় এবং তোমরা লোকদেরকে আললাহ র' পথ থেকে নিবৃত্ত করেছো এই অপরাধে যেন তোমরা অশুভ পরিণামের সম্মুখীন না হও এবং কঠিন শাস্তি ভোগ না করো। ৯৬) তোমাদের কাছে যা কিছু আছে খরচ হয়ে যাবে এবং আললাহ র' কাছে যা কিছু আছে তাই স্থায়ী হবে এবং আমি অবশ্যই যারা সবরের পথ অবলম্বন করবে তাদের প্রতিদান তাদের সর্বোত্তম কাজ অনুযায়ী দেবো। ৯৭) পুরুষ বা নারী যে-ই সৎকাজ করবে, সে যদি মুমিন হয়, তাহলে তাকে আমি দুনিয়ায় পবিত্র-পরিচ্ছন্ন জীবন দান করবে এবং (আখেরাতে) তাদের প্রতিদান দেবো তাদের সর্বোত্তম কাজ অনুসারে। ২৩) নিসন্দেহে আললাহ তাদের সমস্ত কার্যকলাপ জানেন, যা তারা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে। তিনি তাদেরকে মোটেই পছন্দ করেন না যারা আত্মগরিমায় ডুবে থাকে। ২৮) হ্যাঁ, এমন কাফেরদের জন্য, যারা নিজেদের ওপর জুলুম করতে থাকা অবস্থায় যখন মৃত্যুর মালাকের হাতে পাকড়াও হয় তখন সাথে সাথেই (অবাধ্যতা ত্যাগ করে) আত্মসমর্পণ করে এবং বলে, “আমরা তো কোনো দোষ করছিলাম না।” মালাইকাহরা জবাব দেবে, “কেমন করে দোষ করছিলে না, তোমাদের কার্যকলাপ আললাহ খুব ভালো করেই জানেন। ৪৪) আগের রসূলদেরকেও আমি উজ্জ্বল নিদর্শন ও কিতাব দিয়ে পাঠিয়েছিলাম এবং এখন এ বাণী তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে তুমি লোকদের সামনে সেই শিক্ষার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে যেতে থাকো। যা তাদের জন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং যাতে লোকেরা (নিজেরাও) চিন্তা-ভাবনা করে। ৬০) যারা আখেরাত বিশ্বাস করে না তারাই তো খারাপ গুণের অধিকারী হবার যোগ্য৷ আর আললাহ র' জন্য তো রয়েছে মহত্তম গুণাবলী, তিনিই তো সবার ওপর পরাক্রমশালী এবং জ্ঞানের দিক দিয়ে পূর্ণতার অধিকারী। ৬৪) আমি তোমার প্রতি এ কিতাব এজন্য অবতীর্ণ করেছি যাতে তুমি এ মতভেদের তাৎপর্য এদের কাছে সুস্পষ্ট করে তুলে ধরো। যার মধ্যে এরা ডুবে আছে। এ কিতাব পথনির্দেশ ও রহমত হয়ে নাযিল হয়েছে তাদের জন্য যারা একে মেনে নেবে। ৭১) আর দেখো, আললাহ তোমাদের একজনকে আর একজনের ওপর রিযিকের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তারপর যাদেরকে এ শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে তারা এমন নয় যে নিজেদের রিযিক নিজেদের গোলামদের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে থাকে, যাতে উভয় এই রিযিকে সমান অংশীদার হয়ে যায়। তাহলে কি এরা শুধু আললাহ র' অনুগ্রহ মেনে নিতে অস্বীকার করে? ৭২) আর আললাহ তোমাদের জন্য তোমাদের সমজাতীয় স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, তিনিই এই স্ত্রীদের থেকে তোমাদের পুত্র-পৌত্রাদি দান করেছেন এবং ভালো ভালো জিনিস তোমাদের খেতে দিয়েছেন। তারপর কি এরা (সবকিছু দেখার ও জানার পরও) বাতিলকে মেনে নেয় এবং আললাহ র' নিয়ামত অস্বীকার করে?
ব্যাখ্যাঃ সুরহ হিজরির ২৬/২৭ ও সুরহ নাহালের ৪০ নম্বর হাদিস মিলিয়ে অধ্যয়ন করে আমরা জানতে পারি যে, আললাহ মানুষ ও জিনকে সৃষ্টি করতে মাটি ও আগুনের উপাদানের প্রতি নির্ভরশিল নন। সুরহ নাহালের ৭২ ও ১১৪ হাদিসে আমাদেরকে খাবারসহ সকল আললাহ র' দানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে আদেশ করা হয়েছে। যে কারনে খাবারের আগে ও পরে আললাহ র' প্রশংসার দুআ পাঠ করতে হয় এবং সলাহতের গুরত্ব এখানে আমরা জানতে পারি। ৬০ নম্বর হাদিসের আখিরতে বিশ্বাস ও সেই অনু্যায়ি কাজের গুরত্ব বলা আছে। ৭১ নম্বর হাদিসে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে, ধনি মানুষরা তার দুনইয়ার অস্থায়ী সম্পদে গরিবদের অধিকার আদায় করতে চায় না, অথচ ৫৩ নম্বর হাদিস মতে আললাহ যেহেতু সকল সম্পদের প্রকৃত মালিক, তাই আললাহ র' আদেশ নিষেধ অমান্য করলে আললাহ র' জান্নাত পাওয়া সম্ভব কেন নয় সেই চিন্তা করতে বলা হয়েছে। উপরে উল্লেখিত বাকি হাদিসসমুহে গনতন্ত্র, রাজতন্ত্রের নামে বিলাসিতা, ভোট গ্রহনের অর্থ অপচয়, অশান্তি, ঝগড়া, মারামারি ও ক্ষমতার লোভের পরিনতি আমাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। সুরহ নাহালের ১০ থেকে ২১ নম্বর হাদিসসহ পুরো সুরহতে আললাহ র' অগনিত দানের উল্লেখ করে আমাদেরকে সলাহ ও যিকির ও ৬৯ নম্বর হাদিসে ফিকিরের গুরত্ব শিখানো হয়েছে। সালামুন।

কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪৬ঃ
সুরহ তাওবাঃ ৪০) তোমরা যদি নাবিকে সাহায্য না করো, তাহলে কোন পরোয়া নেই। আললাহ তাকে এমন সময় সাহায্য করেছেন যখন কাফেররা তাকে বের করে দিয়েছিল, যখন সে ছিল মাত্র দু’জনের মধ্যে দ্বিতীয় জন, যখন তারা দু’জন গুহার মধ্যে ছিল, তখন সে তার সাথীকে বলেছিল, চিন্তিত হয়ো না, আললাহ আমাদের সাথে আছেন। সে সময় আললাহ নিজের পক্ষ থেকে তার ওপর মানসিক প্রশান্তি নাযিল করেন এবং এমন সেনাদল পাঠিয়ে তাকে সাহায্য করেন, যা তোমরা দেখনি এবং তিনি কাফেরদের বক্তব্যকে নীচু করে দেন। আর আললাহ র' কথা তো সমুন্নত আছেই। আললাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। ৪১) -বের হও, হালকা, কিংবা ভারী যাই হওনা কেন, এবং জিহাদ করো আললাহ র' পথে নিজের ধন-প্রাণ দিয়ে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে। ৫০) তোমরা ভাল কিছু হলে তা তাদের কষ্ট দেয় এবং তোমার ওপর কোন বিপদ এলে তারা খুশী মনে সরে পড়ে এবং বলতে থাকে, “ভালই হয়েছে, আমরা আগে ভাগেই আমাদের ব্যাপার সেরে নিয়েছি”৷ ৫৩) তাদের বলে দাও, “তোমরা নিজেদের ধন-সম্পদ স্বেচ্ছায় ও সানন্দে ব্যয় কর অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবে ব্যয় কর, তা গৃহীত হবে না৷ কারণ তোমরা ফাসেক গোষ্ঠী”৷ ৫৪) তাদের দেয়া সম্পদ গৃহীত না হবার এ ছাড়া আর কোন কারন নেই যে, তারা আললাহ ও তার রসূলের সাথে কুফরী করেছে, সলাহতের জন্য যখন আসে আড়মোড় ভাংতে ভাংতে আসে এবং আললাহ র' পথে খরচ করলে তা করে অনিচ্ছাকৃতভাবে। ৫৫) তাদের ধন-দৌলত ও সন্তানের আধিক্য দেখে তোমরা প্রতারিত হয়ো না। আললাহ চান , এ জিনিসগুলোর মাধ্যমে দুনিয়ার জীবনে তাদের শাস্তি দিতে। আর তারা যদি প্রাণও দিয়ে দেয়, তাহলে তখন তারা থাকবে সত্য অস্বীকার করার অবস্থায়। ৮৫) তাদের ধনাঢ়্যতা ও তাদের অধিক সংখ্যক সন্তান সন্তুতি তোমাকে যেন প্রতারিত না করে। আললাহ তো তাদেরকে এ ধন ও সম্পদের সাহায্যে এ দুনিয়ায়ই সাজা দেবার সংকল্প করে ফেলেছেন এবং কাফের থাকা অবস্থায় তাদের মৃত্যু হোক-এটাই চেয়েছেন। ৬৭) মুনাফিক পুরুষ ও নারী পরষ্পরের দোসর৷ খারাপ কাজের হুকুম দেয়, ভাল কাজের নিষেধ করে এবং কল্যাণ থেকে নিজেদের হাত গুটিয়ে রাখে৷ তারা আললাহ কে ভুলে গেছে ,ফলে আললাহ তাদেরকে ভুলে গেছেন। ৬৮) নিশ্চিতভাবেই এ মুনাফিকরাই ফাসেক। এ মুনাফিক পুরুষ ও নারী এবং কাফেরদের জন্য আললাহ জাহান্নামের আগুণের ওয়াদা করেছেন। তার মধ্যে তারা চিরকাল থাকবে৷ সেটিই তাদের জন্য উপযুক্ত৷ আললাহ র' অভিশাপ তাদের ওপর এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব। ৬৯) তোমাদের আচরণ তোমাদের পূর্ববর্তীদের মতোই৷ তারা ছিল তোমাদের চাইতে বেশী শক্তিশালী এবং তোমাদের চাইতে বেশী সম্পদ ও সন্তানের মালিক৷ তারপর তারা দুনিয়ায় নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছে এবং তোমরাও একইভাবে নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছো৷ যেমন তারা করেছিল এবং তারা যেমন অনর্থক বিতর্কে লিপ্ত ছিল তেমনি বিতর্কে তোমরাও লিপ্ত রয়েছো৷ কাজেই তাদের পরিণতি হয়েছে এই যে, দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাদের সমস্ত কাজকর্ম পণ্ড হয়ে গেছে এবং তারাই ক্ষতিগ্রস্ত৷ ৭১) মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, এরা সবাই পরষ্পরের বন্ধু ও সহযোগী৷ এরা ভাল কাজের হুকুম দেয় এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, সলাহ কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আললাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে। এরা এমন লোক যাদের ওপর আল্লাহর রহমত নাযিল হবেই৷ অবশ্যি আললাহ সবার ওপর পরাক্রমশালি এবং জ্ঞানী ও বিজ্ঞ৷ ৭২) এ মুমিন পুরুষ ও নারীকে আললাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদেরকে তিনি এমন বাগান দান করবেন যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহমান হবে এবং তারা তার মধ্যে চিরকাল বাস করবে৷ এসব চির সবুজ বাগানে তাদের জন্য থাকবে বাসগৃহ এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা আললাহ র' সন্তুষ্টি লাভ করবে৷ এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য৷ ৭৯) (তিনি এমনসব কৃপণ ধণীদেরকে ভাল করেই জানেন) যারা ঈমানদেরদের সন্তোষ ও আগ্রহ সহকারে আর্থিক ত্যাগ স্বীকারের প্রতি দোষ ও অপবাদ আরোপ করে এবং যাদের কাছে (আললাহ র' পথে দান করার জন্য) নিজেরা কষ্ট সহ্য করে যা কিছু দান করে তাছাড়া আর কিছুই নেই, তাদেরকে বিদ্রুপ করে৷ আললাহ এই বিদ্রুপকারীদেরকে বিদ্রুপ করেন৷ এদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি৷ ৮১) যাদেরকে পিছনে থেকে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল তারা আললাহ র' রসূলের সাথে সহযোগিতা না করার ও ঘরে বসে থাকার জন্যে আনন্দিত হলো এবং তারা নিজেদের ধন-প্রাণ দিয়ে আললাহ র' পথে জিহাদ করতে অপছন্দ করলো ৷ তারা লোকদেরকে বললো, “এ প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বের হয়ো না”৷ তাদেরকে বলে দাও,জাহান্নামের আগুন এর চেয়েও বেশী গরম, হায়! যদি তাদের সেই চেতনা থাকতো! ৮২) এখন তাদের কম হাসা ও বেশী কাঁদা উচিত৷ কারণ তারা যে গুনাহ উপার্জন করেছে তার প্রতিদান এ ধরনেরই হয়ে থাকে (যে, সে জন্য তাদের কাঁদা উচিত৷) ৮৭) তারা গৃহবাসীনি মেয়েদের সাথে শামিল হয়ে ঘরে থাকতে চেয়েছে এবং তাদের দিলে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে৷ তাই তারা কিছুই বুঝতে পারছে না৷ ১২১) অনুরূপভাবে তারা যখনই (আললাহ র' পথে) কম বা বেশী কিছু সম্পদ ব্যয় করবে এবং (সংগ্রাম সাধনায়) যখনই কোন উপত্যকা অতিক্রম করবে, অমনি তা তাদের নামে লেখা হয়ে যাবে, যাতে আললাহ তাদেরকে তাদের এ ভাল কাজের পুরস্কার দান করেন। ১১৬) আর এও সত্য, আসমান ও যমীনের রাজত্ব আললাহ র' নিয়ন্ত্রনাধীন, জীবন ও মৃত্যু তাঁরই ইখতিয়ারভুক্ত এবং তোমাদের এমন কোন সহায় ও সাহায্যকারী নেই যে তোমাদেরকে তাঁর হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
ব্যাখ্যাঃ ৪০/৪১ নম্বর হাদিসে আললাহ র' উপর ভরসা করার পাশাপাশি কাজের গুরত্ব বলা আছে। ৫০, ৫৩ থেকে ৫৫, ৬৭-৬৯, ৮১, ৮২, ৮৫, ৮৭ নম্বর হাদিসে মুনাফিকের চরিত্র ও পরিনতি বর্ননা আছে। ৭১-৭২, ৭৯, ১২১ নম্বর হাদিসে মুসলিমের চরিত্র কেমন হবে ও পুরষ্কার বলা আছে। সালামুন।

কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪৫ঃ
তারিখঃ ১৫-০৩-২০২৩
সুরহ আল আরফঃ ৯৪) আললাহ বলেন, আমি যখনই কোন জনপদে নাবি পাঠিয়েছি, সেখানকার লোকেদেরকে প্রথমে অর্থকষ্ট ও দুঃখ -দুর্দশায় সম্মুখীন করেছি, এই জন্য যে, হয়তো তারা বিনম্র হবে ও নতি স্বীকার করবে। ৯৫) তারপর তাদের দুরবস্থাকে সমৃদ্ধিতে ভরে দিয়েছি। ফলে তারা প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে এবং বলতে শুরু করেছে আমাদের পূর্বপুরুষদের ওপরও দুর্দিন ও সুদিনের আনাগোনা চলতো। অবশেষে আমি তাদেরকে সহসাই পাকড়াও করেছি। অথচ তারা জানতেও পারেনি। ৯৬) যদি জনপদের লোকেরা ঈমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতো, তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর রবকতসমূহের দুয়ার খুলে দিতাম। কিন্তু তারা তো প্রত্যাখ্যান করেছে। কাজেই তারা যে অসৎকাজ করে যাচ্ছিলো তার জন্যে আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি। ৯৭) জনপদের লোকেরা কি এখন এই ব্যাপারে নির্ভয় হয়ে গেছে যে, আমার শাস্তি কখনো অকস্মাত রাত্রিকালে তাদের ওপর এসে পড়বে না, যখন তারা থাকবে নিদ্রামগ্ন? ৯৮) অথবা তারা নিশ্চিন্তে হয়ে গেছে যে, আললাহ র' শাস্তি কখনো দিনের বেলা তাদের ওপর এসে পড়বে না, যখন তারা খেলা ধুলায় মেতে থাকবে? ৯৯) এরা কি আললাহ র' পরিক্ষার ব্যাপারে নির্ভীক হয়ে গেছে? অথচ যে সব সম্প্রায়ের ধ্বংস অবধারিত তারা ছাড়া আললাহ র' শাস্তি আগমনের ব্যাপারে আর কেউ নির্ভীক হয় না।
সুরহ আনআমঃ ১২) এদেরকে জিজ্ঞেস করো, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সেগুলো কার? –বলো, সবকিছু এক আললাহ র' সৃষ্টি। অনুগ্রহের পথ অবলম্বন করা তিনি নিজের জন্য অপরিহার্য করে দিয়েছেন। ( এজন্যই তিনি নাফরমানী ও সীমালংঘন করার অপরাধে তোমাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে পাকড়াও করেন না ) কিয়ামতের দিন তিনি তোমাদের সবাইকে অবশ্যি একত্র করবেন। এটি এমন একটি সত্য যার মধ্যে সংশয়-সন্দেহের কোন অবকাশই নেই। কিন্তু যারা নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে তারা একথা মানে না।
১১৪) এমতাবস্থায় আমি ( সালামুন আলা মুহাম্মাদ ) কি আললাহ ছাড়া অন্য কোন মীমাংসাকারীর সন্ধান করবো? অথচ আললাহ পূর্ণ বিস্তারিত বিবরণসহ তোমাদের জন্য কুরআন নাযিল করেছেন। আর যাদেরকে আললাহ ( তোমার আগে ) কিতাব দিয়েছিলেন, তারা জানে এই কুরআন তোমার রবেরই পক্ষ থেকে সত্য সহকারী নাযিল হয়েছে। কাজেই তুমি সন্দেহ পোষণকারীদের অন্তরভুক্ত হয়ো না। ১১৫) সত্যতা ও ইনসাফের দিক দিয়ে তোমার রবের কথা পূর্ণাংগ, তাঁর ফরমানসমূহ পরিবর্তন করার কেউ নেই এবং তিনি সবকিছু শুনেন ও জানেন।
ব্যাখ্যাঃ সুরহ আরফের ১২ নম্বর রুকুতে ৯৪ থেকে ৯৯ নম্বর হাদিস ছয়টি আছে। এই হাদিসসমুহের শিক্ষা হলো আললাহ মুসলিম আবদ হয়েও আমরা পৃথিবিতে সম্পদশালি হয়ে থাকতে পারবো। তাই একা ভোগদখলের আশায় আমরা সমাজে অধিক মুনাফার সুদ গ্রহন এবং বেতন বৈষম্য করে অন্যের অধিকার নষ্ট করে যে পাপ করছি তা থেকে বিরত থাকতে হবে। নয়তো কাফির মুনাফিক ব্যক্তির সম্পদশালি হওয়ার পরিনতি কি হবে বলা আছে। সুরহ আনআমের ১২ নম্বর হাদিস আললাহ নিজেকেও নাফস বলেছেন এবং কেনো পাপি সম্পদশালিরা নগদ শাস্তি পাবে না তা জানিয়ে দিয়েছেন। নাফস শব্দটা মানুষের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়েছে। নাফস অর্থ স্রষ্টা, সৃষ্টি, স্বত্তা সব অর্থেই বুঝায়। তাই কুরআনের প্রতিটা হাদিসের আদেশ নিষেধ বুঝতে হলে, পুরো ৩০ পারা কুরআনকে বিবেচনায় রাখতে হয়। ১১৪ ও ১১৫ হাদিসে কুরআন ছাড়া ইসলাম জানা ও মানার জন্য আর কোনো বইয়ের দরকার নাই বলা আছে। ছবির সুরহ কুওউইরতের ৮ নম্বর হাদিসের শিক্ষা কেবল শিশু হত্যা নয় বরং কুরআনের জ্ঞান নারি পুরুষ উভয়ের জন্য নিশ্চিত না করে, নারিকে দুই চোখ বাদে ডাকাত সাজিয়ে বস্তাবন্দি করে যে সকল পুরুষ নিজেকে নানাভাবে ও উপায়ে প্রদর্শন করে অথবা নিয়মিত নিজের নানা রং ঢং এর ছবি অন্যদের দেখায় তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে ও পরিনাম বলা আছে। আরও বুঝতে সুরহ নুর, আহযাব অধ্যয়ন করতে হবে। সালামুন।

কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪৪ঃ


সুরহ বা-ক-রহঃ ২৫৯) অথবা দৃষ্টান্তস্বরূপ সেই ব্যক্তিকে দেখো যে এমন একটি লোকালয় অতিক্রম করেছিল, যার গৃহের ছাদগুলো উপুড় হয়ে পড়েছিল। সে বললোঃ এই ধ্বংসপ্রাপ্ত জনবসতি, একে আললাহ আবার কিভাবে জীবিত করবেন? একথায় আললাহ তার প্রাণ হরণ করলেন এবং সে একশো বছর পর্যন্ত মৃত পড়ে রইলো। তারপর আললাহ পুনর্বার তাকে জীবন দান করলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ বলো, তুমি কত বছর পড়েছিলে? সে জবাব দিলঃ এই একদিন বা কয়েক ঘন্টা পড়েছিলাম। আললাহ বললেনঃ “বরং একশোটি বছর এই অবস্থায় তোমার ওপর দিয়ে চলে গেছে। এবার নিজের খাবার ও পানীয়ের ওপর একবার নজর বুলাও, দেখো তার মধ্যে কোন সামান্য পরিবর্তনও আসেনি। অন্যদিকে তোমার গাধাটিকে দেখো ( তাঁর পাঁজরগুলোও পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ) আর এটা আমি এ জন্য করেছি যে, মানুষের জন্য তোমাকে আমি একটি নিদর্শন হিসেবে দাঁড় করাতে চাই। তারপর দেখো, এই অস্থিপাঁজরটি, কিভাবে একে উঠিয়ে এর গায়ে গোশত ও চামড়া লাগিয়ে দিই। এভাবে সত্য যখন তার সামনে সুস্পষ্ট হয়ে উঠলো তখন সে বলে উঠলোঃ “আমি জানি, আললাহ সবকিছুর ওপর শক্তিশালী। ২৬০) আর সেই ঘটনাটিও সামনে রাখো, যখন ইবরাহীম বলেছিলঃ “আমার রব, আমাকে দেখিয়ে দিন কিভাবে আপনি মৃতদের পুনজীবিত করেন। আললাহ বললেনঃ তুমি কি বিশ্বাস করো না? ইবরাহীম জবাব দিলঃ বিশ্বাস তো করি, তবে মানসিক নিশ্চিন্ততা লাভ করতে চাই। আললাহ বললেনঃ ঠিক আছে, তুমি চারটি পাখি নাও এবং তাদেরকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও। তারপর তাদের এক একটি অংশ এক একটি পাহাড়ের ওপর রাখো। এরপর তাদেরকে ডাকো। তারা তোমার কাছে দৌড়ে চলে আসবে ৷ ভালোবাবে জেনে রাখো, আললাহ প্রবল পরাক্রমশালী ও জ্ঞানময়। ২৮২) হে ঈমানদাগণ! যখন কোন নির্ধারিত সময়ের জন্য তোমরা পরস্পরে মধ্যে ঋণের লেনদেন করো তখন লিখে রাখো। উভয় পক্ষের মধ্যে ইনসাফ সহকারে এক ব্যক্তি দলীল লিখে দেবে। আললাহ যাকে লেখাপড়ার যোগ্যতা দিয়েছেন তার লিখতে অস্বীকার করা উচিত নয়। সে লিখবে এবং লেখার বিষয়বস্তু বলে দেবে, সেই ব্যক্তিকে যার ওপর ঋণ চাপছে (অর্থাৎ ঋণগ্রহীতা ) ৷ তার রব আললাহ কে' ভয় করা উচিত। যে বিষয় স্থিরীকৃত হয়েছে তার থেকে যেন কোন কিছুর কম বেশি না করা হয়। কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি বুদ্ধিহীন বা দুর্বল হয় অথবা লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে, তাহলে তার অভিভাবক ইনসাফ সহকারে লেখার বিষয়বস্তু বলে দেবে। তারপর নিজেদের পুরুষদের মধ্য থেকে দুই ব্যক্তিকে তার স্বাক্ষী রাখো। আর যদি দু’জন পুরুষ না পাওয়া যায় তাহলে একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলা সাক্ষী হবে, যাতে একজন ভুলে গেলে অন্যজন তাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। এসব সাক্ষী এমন লোকদের মধ্য থেকে হতে হবে যাদের সাক্ষ্য তোমাদের কাছে গ্রহণীয়। সাক্ষীদেরকে সাক্ষ দেবার জন্য বললে তারা যেন অস্বীকার না করে। ব্যাপার ছোট হোক বা বড়, সময়সীমা নির্ধারণ সহকারে দলীল লেখাবার ব্যাপারে তোমরা গুড়িমসি করো না। আললাহ র' কাছে তোমাদের জন্য এই পদ্ধতি অধিকতর ন্যায়সংগত, এই পদ্ধতির সাহায্যে সাক্ষ প্রতিষ্ঠা বেশী সহজ হয় এবং তোমাদের সন্দেহ-সংশয়ে লিপ্ত হবার সম্ভবনা কমে যায়। তবে যেসব ব্যবসায়িক লেনদেন তোমরা পরস্পরের মধ্যে হাতে হাতে করে থাকো, সেগুলো না লিখলে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু ব্যবসায়িক বিষয়গুলো স্থিরীকৃত করার সময় সাক্ষী রাখো। লেখক ও সাক্ষীকে কষ্ট দিয়ো না। এমনটি করলে গোনাহের কাজ করবে। আললাহ র' গযব থেকে আত্মরক্ষা করো ৷ তিনি তোমাদের সঠিক কর্মপদ্ধতি শিক্ষা দান করেন এবং তিনি সবকিছু জানেন। ২৮৩) যদি তোমরা সফরে থাকো এবং সে অবস্থায় দলীল লেখার জন্য কোন লেখক না পাও, তাহলে বন্ধক রেখে কাজ সম্পন্ন করো। যদি তোমাদের মধ্য থেকে কোন ব্যক্তি অন্যের ওপর ভরসা করে তার সাথে কোন কাজ কারবার করে, তাহলে যার ওপর ভরসা করা হয়েছে সে যেন তার আমানত যথাযথরূপে আদায় করে এবং নিজের রব আললাহ কে' ভয় করে। আর সাক্ষ কোনক্রমেই গোপন করো না। যে ব্যক্তি সাক্ষ গোপন করে তার হৃদয় গোনাহর সংস্পর্শে কলুষিত। আর আললাহ তোমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে বেখবর নন।
ব্যাখ্যাঃ সুরহ বাকরহের ২৫৯ ও ২৬০ নম্বর হাদিসে মানুষের জন্য বিশ্বাস করা কঠিন এমন সত্য কাহিনি আছে। যা বিশ্বাস করা একজন মুসলিমের জন্য বুঝে আসুক বা না আসুক উভয় ক্ষেত্রে বাধ্যতামুলক। সুরহ কাহাফসহ আরও কিছু সুরহতে এই জাতিয় সত্য কাহিনি আছে। কুরআনে আছে বলে মানুষও বিভিন্ন বিজ্ঞান রচনা বা নাবি বা সাহাবি বা ওয়ালি আওলিয়া, পির, দরবেশ, নেতা কাহিনি নামে বিভিন্ন উদ্ভট চুটকি, গল্প, পাতিহাস রচনা করে থাকে। এই মনোভাব একটা পাপ কাজ। কারন একজন মুসলিম কুরআনের বর্ননা বিশ্বাস করতে বাধ্য এবং যথেষ্ট। আললাহ ২৮২ ও ২৮৩ নম্বর হাদিসে লেনদেনের বিস্তারিত নিয়ম পদ্ধতি বর্ননা দিয়েছেন। এতেই প্রমান হয় প্রচলিত পাচ বা তিন ওয়াক্ত সলাহ আললাহ আমাদের জন্য বাধ্যতামুলক করেননি। বরং সলাহ যিকির ২৪ ঘন্টায় পালন করতে হবে। প্রচলিত পাচ ওয়াক্ত সলাহ যদি বাধ্যতামুলকই হতো তাহলে প্রচলিত সলাহতের বিস্তারিত কুরআনে অবশ্যই থাকতো। আর বাস্তব প্রমান হলো আমরা ঢাকাতে যত মাসজিদ দেখি তার অধিকাংশই তালাবদ্ধ থাকে। পাচ ওয়াক্ত সলাহ ব্যতিত আর তেমন কোনো কাজই এই মাসজিদসমুহে হয় না। অথচ হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে জিবন কাটাচ্ছে। যা সুস্পষ্ট কুরআন বিরোধি কাজ এবং কাবিরহ পাপ। কারন ইট বালুর মাসজিদের চাইতে মানুষের অধিকার অনেক বেশি। বরং তুলনায় চলে না। এই করুন পরিনামের কারন হলো প্রথমত অধিকাংশ মুসলিম পাচ ওয়াক্ত সলাহ পড়ে না আর যারা পাচ ওয়াক্ত সলাহ নিয়মতি পড়ে তাদের অধিকাংশই ভুল বিশ্বাস করে যে দৈনিক পাচ ওয়াক্ত সলাহ পড়লেই জান্নাত নিশ্চিত। তাদের অধিকাংশই সলাহ অর্থ বুঝে পড়ে না। ফলে সলাহতে যে কুরআন পাঠ করা হয় তাতে কোনো উপকারই তারা পায় না। এইভাবে পাচ ওয়াক্ত সলাহ লোক দেখানো কাজে রুপান্তরিত হয়েছে। তাই পাচ ওয়াক্ত সলাহতের ১৭ রকাআত ফারদ সলাহ যা আমরা সুরহ হাদিদের ২৭ নম্বর হাদিস দ্বারা নিজেদের জন্য বাধ্যতামুলক চাপিয়ে নিয়েছি। তা সঠিকভাবে আন্তরিকতার সাথে অর্থ বুঝে পালন করতে হবে এবং বাকি ২৪ ঘন্টার জিবনে বাস্তবায়ন করতে হবে। নয়তো আললাহ র অসন্তুষ্টির কারন হবে। ইনশাআললাহু আমিনিনা। সুরহ ইউসুফ, হাদিস নম্বর ৯৯।
তারিখঃ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইংলিশ, ০১ ফাল্গুন ১৪২৯ বাংলা, ২২ রজব ১৪৪৪ হিজরি।

কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪৩ঃ
সুরহ বা-ক-রহঃ ৬৭) এরপর স্মরণ করো সেই ঘটনার কথা যখন মূসা তার জাতিকে বললো, আললাহ তোমাদের একটি গাভী যবেহ করা হুকুম দিচ্ছেন। তারা বললো, তুমি কি আমাদের সাথে ঠাট্টা করছো? মূসা বললো, নিরেট মূর্খদের মতো কথা বলা থেকে আমি আললাহ র' কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। ৬৮) তারা বললো, আচ্ছা তাহলে তোমার রবের কাছে আবেদন করো তিনি যেন সেই গাভীর কিছু বিস্তারিত বিবরণ আমাদের জানিয়ে দেন। মূসা জবাব দিল আললাহ বলছেন, সেটি অবশ্যি এমন একটি গাভী হতে হবে যে বৃদ্ধা নয়, একেবারে ছোট্ট বাছুরটিও নয় বরং মাঝারি বয়সের হতে হবে। কাজেই যেমনটি হুকুম দেয়া হয় ঠিক তেমনটিই করো। ৬৯) আবার তারা বলতে লাগলো, তোমার রবের কাছে আরো জিজ্ঞেস করো, তার রংটি কেমন হবে? মূসা জবাব দিল, তিনি বলছেন, গাভীটি অবশ্যি হলুদ রংয়ের হতে হবে, তার রং এতই উজ্জল হবে যাতে তা দেখে মানুষের মন ভরে যাবে। ৭০) আবার তারা বললো, তোমার রবের কাছ থেকে এবার পরিষ্কার ভাবে জেনে নাও, তিনি কেমন ধরনের গাভী চান? গাভীটি নির্ধারণ করার ব্যাপারে আমরা সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি। আললাহ চাইলে আমরা অবশ্যি এটি বের করে ফেলবো। ৭১) মূসা জবাব দিল আললাহ বলছেন,সেটি এমন একটি গাভী যাকে কোন কাজে নিযুক্ত করা হয়না, জমি চাষ বা ক্ষেতে পানি সেচ কোনটিই করে না, সুস্থ-সবল ও নিখুঁত। একথায় তারা বলে উঠলো, হ্যা, এবার তুমি ঠিক সন্ধান দিয়েছো। অতপর তারা তাকে যবেহ করলো, অন্যথায় তারা এমনটি করতো বলে মনে হচ্ছিল না। 
সুরহ ইমরনঃ ৭১) হে আহলি কিতাব, কেন সত্যের গায়ে মিথ্যার প্রলেপ লাগিয়ে তাকে সন্দেহযুক্ত করে তুলছো? কেন জেনে বুঝে সত্যকে গোপন করছো? ১০২) হে ঈমানদারগণ, তোমরা যথাযথভাবে আললাহ কে' ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়।
সুরহ মা-ইদাহঃ ১০১) হে ঈমানদারগণ, এমন কথা জিজ্ঞেস করো না যা তোমাদের কাছে প্রকাশ করে দেয়া হলে তোমাদের খারাপ লাগবে। তবে কুরআন নাযিলের সময় যদি তোমরা সেসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করো তাহলে তা তোমাদের কাছে প্রকাশ করা হবে। এই পর্যন্ত তোমরা যা কিছু করেছো, আললাহ তা মাফ করে দিয়েছেন। তিনি ক্ষমাশীল ও সহনশীল। ১০২) তোমাদের পূর্বের দল এই ধরনের প্রশ্ন করেছিল। তারপর সেসব কথার জন্যই তারা কুফরীতে লিপ্ত হয়েছিল। 
ব্যাখ্যাঃ আললাহ, সুরহ বাকরহের ৬৭ নম্বর হাদিসে সালামুন আলা মুসার অনুসারিদেরকে একটা গরু জবাই করতে বলেছিলেন। কিনতু তারা অযথা প্রশ্ন ও বিস্তারিত জানতে চাওয়ার কারনে আরও চারটি  ৬৮ থেকে ৭১ নম্বর হাদিস বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গরু বাছাইয়ের কাজটা জটিল হয়েছিল। এই কারনে সুরহ মাইদাহের ১০১  ও ১০২ নম্বর হাদিসে কুরআনে আললাহ যা আদেশ করেন এবং নিষেধ করেন তার বাহিরে গিয়ে অপ্রয়োজনিয় প্রশ্ন করে ইসলাম অনুসরণের দায়িত্বকে জটিল ও কঠিন করতে নিষেধ করেছেন। কারন সুরহ ইমরনের ৭১ নম্বর হাদিস মতে তাতে কুরআনকে অসম্পুর্ন বা বিস্তারিত নয় প্রভৃতি অপবাদ দিয়ে মানুষকে কুরআন থেকে দূরে রাখার অপকৌশল বাস্তবায়ন করা হয়। সুবহান আললাহ। আললাহ পবিত্র ও সকল দোষ ত্রুটি মুক্ত।



কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪২ঃ
সুরহ ফুরকনঃ ৫৮) হে মুহাম্মাদ, ভরসা করো এমন 'আললাহ র' প্রতি যিনি জীবিত এবং কখনো মরবেন না। তাঁর সপ্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করো। নিজের বান্দাদের গোনাহের ব্যাপারে কেবল তাঁরই জানা যথেষ্ট। ৫৫) এক 'আললাহ কে' বাদ দিয়ে লোকেরা এমন সব সত্তার পূজা করছে যারা না তাদের উপকার করতে পারে, না অপকার। আবার অতিরিক্ত হচ্ছে এই যে, কাফির নিজের রবের মোকাবিলায় প্রত্যেক বিদ্রোহীর সাহায্যকারী হয়ে আছে। ৬৩) রহমানের অনুগত আবদ তো তারাই যারা পৃথিবীর বুকে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মূর্খরা তাদের সাথে কথা বলতে থাকলে বলে দেয়, ৬৪) তোমাদের সালাম। তারা নিজেদের রবের সামনে সিজদায় অবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে রাত কাটিয়ে দেয়। ৬৭) তারা যখন ব্যয় করে তখন অযথা ব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করেনা বরং উভয় প্রান্তিকের মাঝামাঝি তাদের ব্যয় ভারসাম্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। ৬৮) তারা আললাহ ছাড়া আর কোন উপাস্যকে ডাকে না, আললাহ যে প্রানকে হারাম করেছেন কেআন সংগত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না এসব যে-ই করে সে তার গোনাহের শাস্তি ভোগ করবে। ৭২) (আর রহমানের বান্দা হচ্ছে তারা) যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং কোন বাজে জিনিসের কাছ দিয়ে পথ অতিক্রম করতে থাকলে ভদ্রলোকের মত অতিক্রম করে যায়। ৭৩) তাদের যদি তাদের রবের আইয়াত শুনিয়ে উপদেশ দেয় হয় তাহলে তারা তার প্রতি অন্ধ বধির হয়ে থাকে না।
সুরহ শুআরহঃ ৫৬) এবং আমরা একটি দল, সদা-সতর্ক থাকাই আমাদের রীতি”৷
সুরহ আননুরঃ ৩৬) (তাঁর আলোর পথ অবলম্বনকারী ) ঐ সব ঘরে পাওয়া যায়, যেগুলোকে উন্নত করার ও যেগুলোর মধ্যে নিজের নাম স্মরণ করার হুকুম আললাহ দিয়েছেন। সেগুলোতে এমন সব লোক সকাল সাঁঝে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। ৩৭) যারা ব্যবসায় ও বেচাকেনার ব্যস্ততার মধ্যেও 'আললাহ র' স্মরণ এবং সলাহ প্রতিষ্টা ও যাকাত আদায় করা থেকে গাফিল হয়ে যায় না। তারা সেদিনকে ভয় করতে থাকে যেদিন হৃদয় বিপর্যস্ত ও দৃষ্টি পাথর হয়ে যাবার উপক্রম হবে। ৪৫) আর আললাহ প্রত্যেক প্রাণ বিশিষ্টকে এক ধরনের পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তাদের মধ্য থেকে কেউ চলেছে পেটে ভর দিয়ে, কেউ চলেছে দু’পায়ে হেঁটে আবার কেউ চারপায়ে ভর দিয়ে চলছ। যা কিছু তিনি চান পয়দা করেন, তিনি প্রত্যেক জিনিসের ওপর শক্তিশালী। ৪৬) আমি পরিষ্কার সত্য বিবৃতকারী আইয়াহ নাযিল করে দিয়েছি তবে আললাহ যাকে চান সত্য সরল পথ দেখান।
ব্যাখ্যাঃ সুরহ ফুরকনের ৫৮ নম্বর হাদিসে, আললাহ আমাদেরকে শব্দে শব্দে শিক্ষা দিয়েছেন যে তিনি কখনও মরবেন না। কুরআন যে বিস্তারিত এটাও তার একটা প্রমান। উপরে উল্লেখিত সুরহ ফুরকনের বাকি হাদিসসমুহ আমাদের চরিত্রে চর্চা করতে হবে। যা আমরা চর্চা করি না বলেই রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার জন্য পাগল। কারন ক্ষমতায় গেলেই তো জনগনের সম্পদ লুটিপুটে খাওয়া যায়। যদি রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সততা থাকে তখন আর কেউ রাষ্ট্র প্রধান হওয়ার জন্য লোভ করবে না। কারন সেটা তখন ভোগবিলাসের পরিবর্তে দায়িত্বশিল ও ত্যাগের পদ হবে। যেমন সুরহ শুআরহের ৫৬ নম্বর হাদিসে ফিরআউন অহংকার করে বলেছিল সে সবস্থানে হাজির নাজির থাকতে চায়। একইভাবে আমরা বর্তমান শাসকদের জনগনকে শোষন করার জন্য ছিছি ক্যামেরা বা তথ্য প্রযুক্তি দিয়ে মানুষকে নিয়ন্ত্রন করতে দেখছি। সুরহ নুরের ৪৫ নম্বর হাদিসে আললাহ বলেছেন তিনি আমাদের পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। কারন মাটি পানি আললাহ র' নিকট একই। কিনতু যে নিজের স্রষ্টায় বিশ্বাসি নয় সে এটাকে কুরআনের ভুল হিসাবে প্রমান করতে চাইবে। আর এই ধরনের ব্যক্তিকেই আললাহ কুরআনের পথ দেখান না। সুরহ নুরের ৩৬ ও ৩৭ হাদিসে সলাহতের আদেশ আছে। ৩৬ নম্বর বাক্যে আযান শব্দটা আছে। আযান আললাহু অর্থ আললাহ র' হুকুম, আদেশ। ৩৭ নম্বর হাদিসে সলাহ, যিকির, যাকাত, ব্যবসা চারটি শব্দই আছে। তাই সলাহ কেবল পাচ ওয়াক্ত নয় ঘড়ে বাইরে সবস্থানেই আললাহ র' আদেশ পালন করতে হবে। ৪৬ নম্বর হাদিসে কুরআনই যে সালামুন আলা মুহাম্মাদের হাদিস তা বলা আছে। যে বোঝে না তাকে পরের দুই হাদিস অধ্যয়ন করতে হবে। ইনশাআললাহু আমিনিনা।




কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান ৪১ঃ

তারিখঃ ১১ নভেম্বর ২০২২ইং
সুরহ আসসফফাতঃ ২৫) “তোমাদের কি হয়েছে, এখন কেন পরস্পরকে সাহায্য করো না? ২৬) আরে, আজ তো এরা নিজেরাই নিজেদেরকে ( একজন অন্যজনকে) সমর্পণ করে দিয়ে যাচ্ছে৷” ২৭) এরপর এরা একে অন্যের দিকে ফিরবে এবং পরস্পর বিতর্ক শুরু করে দেবে৷ ২৮) (আনুগত্যকারীরা তাদের নেতাদেরকে) বলবে, “ তোমরা তো আমাদের কাছে আসতে সোজা দিক দিয়ে৷” ২৯) তারা জবাব দেবে, “না, তোমরা নিজেরাই মু’মিন ছিলে না৷ ৩০) তোমাদের ওপর আমাদের কোন জোর ছিল না৷ বরং তোমরা নিজেরাই ছিলে বিদ্রোহী৷ ৩১) শেষ পর্যন্ত আমরা আমাদের রবের এ ফরমানের হকদার হয়ে গেছি যে, আমরা আযাবের স্বাদ গ্রহণ করবো৷ ৩২) কাজেই আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলাম কারণ আমরা নিজেরাই বিভ্রান্ত ছিলাম৷” ৩৩) এভাবে তারা সবাই সেদিন শাস্তিতে শরীক হবে৷ ৩৪) আমি অপরাধীদের সাথে এমনটিই করে থাকি৷ ৩৫) এরা ছিল এমন সব লোক যখন এদেরকে বলা হতো, “আললাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই” তখন এরা অহংকার করতো৷ ৩৬) এবং বলতো, “আমরা কি একজন উন্মাদ কবির জন্য আমাদের মাবুদদেরকে ত্যাগ করবো?” ৩৭) অথচ সে সত্য নিয়ে এসেছিল এবং রসূলদেরকে সত্য বলে মেনে নিয়েছিল ৩৮) (এখন তাদেরকে বলা হবে) তোমরা নিশ্চিতভাবেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করবে ৩৯) এবং পৃথিবীতে তোমরা যে সমস্ত কাজ করতে তারই প্রতিদান তোমাদের দেয়া হচ্ছে৷
সুরহ ইয়াসিনঃ ৪৭) এবং যখন এদেরকে বলা হয়, আললাহ তোমাদের যে রিযিক দান করেছেন তার মধ্য থেকে কিছু আললাহ র পথে খরচ করো তখন এসব কুফরীতে লিপ্ত লোক মু’মিনদেরকে জবাব দেয় “আমরা কি তাদেরকে খাওয়াবো, যাদেরকে আললাহ চাইলে নিজেই খাওয়াতেন? তোমরা তো পরিস্কার বিভ্রান্তির শিকার হয়েছো৷
সুরহ আশশুআরহঃ ১৯২) এটি রব্বুল আলামীনের নাযিল করা জিনিস৷
ব্যাখ্যাঃ সুরহ সফফাতের হাদিসসমুহ রাজনৈতিক নেতা কর্মি সমর্থকদের সতর্ক করা হয়েছে। কারন তারা সুরহ ইয়াসিনের ৪৭ নম্বর হাদিসের শায়তনি যুক্তি দিয়ে বিভিন্ন অপকৌশলে মানুষের মাঝে অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরি করে। যেমন কুরআনবিমুখ শিক্ষা ব্যবস্থা ও ব্যবসা, বেতন কাঠামো, গবাদি পশু ও ফসল উথপাদন ও বাজারজাত, কর আদায় প্রভৃতি। ছবির সুরহ হাককহের ৪৩ নম্বর হাদিসের সাথে সুরহ শুআরহের ১৯২ হাদিস ও রুকুর মিল আছে। এই কারনেই ৩০ পারা কুরআন নিয়মিত প্রতিদিন অধ্যয়ন করার বিকল্প নাই। তাহলে ইনশাআললাহ কুরআন যে পরিপুর্ন তা নিশ্চিত বুঝা যাবে। সুবহান আললাহ।





 


কুরআনের বাহিরের হাদিসের অপ্রয়োজনিয়তা, প্রমান এক চিল্লা বা চল্লিশাঃ

তারিখঃ ১০ অক্টোবর ২০২২ইং

সুরহ ফুরকনঃ ৩২) অস্বীকারকারীরা বলে, “এ ব্যক্তির কাছে সমগ্র কুরআন একই সাথে নাযিল করা হলো না কেন?” হ্যাঁ, এমন করা হয়েছে এজন্য, যাতে আমি একে ভালোভাবে তোমার মনে গেঁথে দিতে থাকি এবং (এ উদ্দেশ্যে) একে একটি বিশেষ ক্রমধারা অনুযায়ী আলাদা আলাদা অংশে সাজিয়ে দিয়েছি৷
৩৩) আর (এর মধ্যে এ কল্যাণকর উদ্দেশ্যও রয়েছে যে) যখনই তারা তোমার সামনে কোন অবিনব কথা (অথবা অদ্ভুত ধরনের প্রশ্ন) নিয়ে এসেছে তার সঠিক জবাব যথাসময়ে আমি তোমাকে দিয়েছি এবং সর্বোত্তম পদ্ধতিতে বক্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছি৷
সুরহ নাহালঃ ৫৩) তোমরা যে নিয়ামতই লাভ করেছো তাতো আল্লাহরই পক্ষ থেকে, তারপর যখন তোমরা কোনো কঠিন সময়ের মুখোমুখি হও তখন তোমরা নিজেরাই নিজেদের ফরিয়াদ নিয়ে তাঁরই দিকে দৌঁড়াতে থাকো
সুরহ নামালঃ ৪৩) আল্লাহর পরিবর্তে যেসব উপাস্যের সে পূজা করতো তাদের পূজাই তাকে ঈমান আনা থেকে ঠেকিয়ে রেখেছিল৷ কারণ সে ছিল একটি কাফির জাতির অর্ন্তভুক্ত৷
৬৫) . তাদেরকে বল, আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীতে ও আকাশে কেউ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখে না এবং তারা জানেনা কবে তাদেরকে উঠিয়ে নেয়া হবে ৷
৮০) তুমি মৃতদেরকে শুনাতে পারোনা৷ যেসব বধির পিছন ফিরে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে তাদের কাছে নিজের আহবান পৌছাতে পারনা৷ ৮১) এবং অন্ধদেরকে পথ বাতলে দিয়ে বিপথগামী হওয়া থেকে বাঁচাতে পারোনা৷ তুমি তো নিজের কথা তাদেরকে শুনাতে পারো যারা আমার আয়াতর প্রতি ঈমান আনে এবং তারপর অনুগত হয়ে যায়৷
সুরহ নুরঃ ৪৬) আমি পরিষ্কার সত্য বিবৃতকারী আয়াত নাযিল করে দিয়েছি তবে আল্লাহই যাকে চান সত্য সরল পথ দেখান ৷
সুরহ আল আনকাবুতঃ ৫১) আর এদের জন্য কি এ (নিদর্শন ) যথেষ্ঠ নয় যে, আমি তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদেরকে পড়ে শুনানো হয়? আসলে যারা ঈমান আনে তাদের জন্য এর মধ্যে রয়েছে রহমত ও নসিহত৷ ৫২) (হে নবী ! ) বলো, “আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষ্যের জন্য আল্লাহই যথেষ্ঠ ৷ তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর মধ্যে সবকিছু জানেন৷ যারা বাতিলকে মানে ও আল্লাহকে অমান্য করে তারাই ক্ষতিগুস্ত৷
৬৮) তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা সত্যকে মিথ্যা বলে,যখন তা তার সামনে এসে গেছে? জাহান্নামই কি এ ধরনের কাফেরদের আবাস নয়?
৬৯) যারা আমার জন্য সংগ্রাম- সাধনা করবে তাদেরকে আমি আমার পথ দেখাবো৷ আর অবশ্যই আল্লাহ সৎকর্মশালীদেরই সাথে আছেন৷
সুরহ ইমরনঃ ৫৮) এই আয়াত ও জ্ঞানগর্ভ আলোচনা আমি তোমাকে শুনাচ্ছি৷
৮৫) এ আনুগত্য ( ইসলাম) ছাড়া যে ব্যক্তি অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে চায় তার সে পদ্ধতি কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ব্যর্থ, আশাহত ও বঞ্চিত ৷
১০২) হে ঈমানদারগণ ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো৷ মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়৷
১২৯) পৃথিবী ও আকাশে যা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহর মালিকানাধীন ৷ যাকে চান মাফ করে দেন এবং যাকে চান শাস্তি দেন ৷ তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
১৩৪) যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল সব অবস্থায়ই অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ দমন করে ও অন্যের দোষ –ক্রটি মাফ করে দেয়৷ এ ধরনের সৎলোকদের আল্লাহ অত্যন্ত ভালোবাসেন৷
সুরহ মাইদাহঃ ৭৪) তবে কি তারা আল্লাহর কাছে তাওবা করবে না এবং তাঁর কাছে মাফ চাইবে না ? আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
ব্যাখ্যাঃ সুরহ ফুরকনের ৩২-৩৩ নম্বর হাদিস মতে কুরআনের শ্রেনিব্যাস আললাহ ও সালামুন আলা মুহাম্মাদ করেছেন। সাহাবি উমার রদি ইয়াললাহু আনহু করেননি।
সুরহ নাহালের ৫৩ নম্বর হাদিসে ফামিন আললাহি অর্থ আললাহ র পক্ষ হতে বাক্যটি আছে। এই বাক্য থেকেই ফি আমানিললাহ বাক্যটি বানানো হয়েছে।
সুরহ নামালের ৪৩ নম্বর হাদিসের শিক্ষা হলো বুখারি মুসলিমকে সালামুন আলা মুহাম্মাদের হাদিস বিশ্বাস করার কারনে আমরা কুরআন বাদ দিয়ে বুখারি মুসলিম ও হাজার মানুষের লেখা বইয়ের পুজা করছি। ফলে সুরহ ইমরনের উপরে উল্লেখিত হাদিসসমুহের গুরত্ব না দিয়ে মতভেদ করছি একে অপরকে কাফির মুনাফিক বলছি। সুরহ মা-ইদাহের ৭৪ নম্বর হাদিসে নিজের চরিত্র সংশোধনের সহিত আললাহ র নিকট ক্ষমা চাইতে আদেশ করা হয়েছে। সুরহ আনকাবুতে ৫১-৫২ নম্বর হাদিসে কুরআনের হাদিসই যথেষ্ট বলা আছে। সুরহ নামালের ৮০-৮১ নম্বর হাদিস ও সুরহ আনকাবুতের ৬৮-৬৯ নম্বর হাদিসে আললাহ কাদের পথভ্রষ্ট করেন তা বলা আছে। তাই পাপ কাজ করে আললাহ র উপর দোষ দেওয়ার সুযোগ নাই। মুসলিমরা সবাই জান্নাতে যাবে। কথা সত্য কিনতু মুনাফিকির পরিনাম সুরহ নিসার ১৪০ ও ১৪৫ নম্বর হাদিস থেকে মনে রাখতে হবে। আহলি কুরআনসহ মুসলিম বিভিন্ন দলের অনেকেই পেশাদার অভিনয় গান নাচ কবিতা ক্রিড়া সবকিছু হালাল প্রচার করে এটাও দলগত ও রাষ্ট্রিয় মুনাফিকি। সুবহানাকা আললাহুম্মা রব্বানা আমাদেরকে আখিরতের জিবনের বিশ্বাসকে বৃদ্ধি করে কুরআন মতে কাজ করার সাহস দান করুন ও সহজ করে দিন। সুবহান আললাহ। সালামুন।

Popular posts from this blog

কুরআন থেকে আমাদের স্রষ্টা এক আললাহ র আদেশ নিষেধের জ্ঞান অর্জন করে, বাস্তবায়ন করি

কুরআনই হাদিস

Salah